vcBux

Sunday, 20 March 2011

বিএনপি নেতা চৌধুরী আলমের খোঁজ ৯ মাসেও মিলেনি
রাজধানীতে আড়াই বছরে ৫ হাজার বেওয়ারিশ লাশ উদ্ধার\ অধিকাংশই নৃশংস গুপ্ত খুনের শিকার
কামাল উদ্দিন সুমন : রাজধানীতে গুপ্ত খুনের ঘটনা বেড়ে চলছে। সে সাথে বেড়েছে বেওয়ারিশ লাশের সংখ্যা। গত আড়াই বছরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে পুলিশ ৫ হাজার ২শ ২৫টি বেওয়ারিশ লাশ উদ্ধার করেছে এবং আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম এলাশের দাফন কাজ সম্পন্ন করে। উদ্ধারকৃত লাশের অধিকাংশই নৃঃশংস খুনের শিকার। অনেকের হাত কিংবা পা নেই আবার কারোর চক্ষু উপড়ানো ,অনেক লাশের শরীরে গুলীবিদ্ধ ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়। সড়ক দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা, কিংবা রেলে কাটা পড়া বেওয়ারিশ লাশের চাইতে নৃশংস খুনের শিকার বেশী বলে সূত্র জানায়। এদিকে নিখোঁজ হওয়ার ৯ মাস পরও বিএনপি নেতা কাউন্সিলর চৌধুরী আলমের কোন হদিস মিলেনি। গত বছর ২৫ জুন তিনি নিখোঁজ হন। আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম সূত্রে জানা যায়, গত ৫ বছরে ঢাকায় বেওয়ারিশ হিসাবে মোট ৯ হাজার ৫শ ৮৭টি লাশ তারা দাফন করে। এর এর মধ্যে ২০১১ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ১৭৬ জন, ২০১০ সালে ১২০৪ জন, ২০০৯ সালে ১৯৭৮ জন, ২০০৮ সালে ১৮৬৭ জন, ২০০৭ সালে ২২৫৯ জন, ২০০৬ সালে ২০৯৯ জনের লাশ দাফন করে। সূত্র জানায়, ঢাকা শহরে গড়ে প্রায় ৫টি লাশ উদ্ধার করা হচ্ছে। এসব লাশ বেশিরভাগই পরিকল্পিত হত্যাকান্ডের শিকার বলে জানা যায়। সন্ত্রাসীদের অন্তঃকলহ, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ, পূর্ব শত্রুতার জের, রাজনৈতিক শত্রুতা, প্রেমঘটিত বিষয় কিংবা ছিনতাইকারীরা এসব হত্যাকান্ডের পেছনে কাজ করছে। কিন্তু এসব হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করা সম্ভব না হওয়ায় কোনো বিচারকাজ পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। সূত্র জানায়, ঢাকা মেডিকেল কলেজে ৩০টি লাশ রাখার ব্যবস্থা আছে বলে মর্গ সূত্রে জানা যায়। এ ছাড়া বছরের কিছু সময় মরচুয়ারি নষ্ট থাকে, ফলে সঠিকভাবে লাশ ব্যবস্থাপনা সম্ভব হচ্ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মর্গে কর্মরত একজন জানান, জায়গার অভাবে কোনো লাশ বেশিদিন রাখা সম্ভব হয় না। দ্রুত দাফন করার ফলে লাশের পরিচয়, মৃত্যুর কারণ বা কারা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত এর কোনোটিই উদ্ধার করা সম্ভব হয় না। সূত্র জানায়, বেওয়ারিশ হিসাবে লাশ দাফন করায় পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা। ঘাতকদের পরিচয় কিংবা কোনো ক্লু উদঘাটন না হওয়ায় এসব খুনের কোনো বিচার হচ্ছে না। এতে তারা নতুন উদ্যমে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে ।
ডিএমপির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ব্যক্তিগত বিরোধের কারণে বেশিরভাগ হত্যার ঘটনা ঘটে। হত্যাকারীরা লাশ গুম করার উদ্দেশে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে ফেলে যায়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকেও লাশ ঢাকায় আনা হয়। স্থান পরিবর্তনের কারণে লাশের পরিচয় শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক সময় লাশের টুকরা উদ্ধার করা হয়। যাতে তার পরিচয় পাওয়া সম্ভব হয় না। এ ক্ষেত্রে আমাদেরও তেমন কিছু করার থাকে না। যদি মার্ডার হয় তাহলে তার মামলা হচ্ছে এবং এগুলোর ছবি সিআইডির গেজেটে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, কখনো কখনো বিকৃত লাশ উদ্ধার করা হয়। এসব লাশের ছবি তার আত্মীয়-স্বজন দেখলেও চিনতে পারে না। অনেকে হত্যা করে লাশ রেললাইনে রেখে যায়। রেললাইনে কাটা যেসব লাশ উদ্ধার করা হয় সেগুলোর পরিচয় বের করা কঠিন।
এডভোকেট এলিনা খান বলেন, প্রতি বছর এত বেওয়ারিশ লাশ হওয়ার কথা না। সঠিক মনিটরিংয়ের অভাবে পরিকল্পিত হত্যার শিকার অনেককে বেওয়ারিশ হিসাবে দাফন করা হচ্ছে। ফলে এসব হত্যার কোনো ক্লু উদঘাটিত হচ্ছে না। যাদের দায়িত্ব লাশের ছবি পত্রিকা বা ইন্টারনেট মাধ্যমে প্রকাশ করা, সারাদেশে এর তথ্য পৌঁছে দেয়া, তারা তা সঠিকভাবে করছে না। তারা দায়িত্ব এড়াতে লাশ বেওয়ারিশ হিসাবে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামকে দিয়ে দিচ্ছে। তিনি আরো বলেন, অনেক সময় পুলিশের তদন্ত করার গাফিলতি থাকায় অপরাধীরা সুয়োগ নেয়। তারা আইনের ফাঁক-ফোকর বের করে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে।
আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের এডি সার্ভিস আব্দুল হালিম দৈনিক সংগ্রামকে জানান, লাশ মেডিকেল এবং থানার মাধ্যমে আসে। সাধারণত মেডিকেল থেকে যেসব বেওয়ারিশ লাশ এখানে নিয়ে আসা হয় সেগুলো কাটা-ছেঁড়া অবস্থায় থাকে বিধায় কিভাবে মারা গেল তা উদঘাটন করার সুযোগ থাকে না।

No comments:

Post a Comment

wel come nrbux

NRBUX